স্ক্যাবিস: কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার | সম্পূর্ণ গাইড
ত্বকের রোগের মধ্যে স্ক্যাবিস (Scabies) একটি অত্যন্ত সাধারণ এবং সংক্রামক সমস্যা। এটি মূলত এক ধরনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পরজীবী (mite) দ্বারা সৃষ্ট, যা মানুষের ত্বকের নিচে প্রবেশ করে চুলকানি ও র্যাশ সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশসহ গরম ও আর্দ্র আবহাওয়াযুক্ত দেশে এই রোগটি বেশি দেখা যায়। সময়মতো চিকিৎসা
না নিলে স্ক্যাবিস দ্রুত অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এই নিবন্ধে
আমরা স্ক্যাবিসের
কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা, প্রতিরোধ এবং বাড়িতে প্রতিকারের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
স্ক্যাবিস কী?
স্ক্যাবিস হল একটি অত্যন্ত সংক্রামক ত্বকের রোগ যা Sarcoptes scabiei নামক ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা সৃষ্ট হয়। এই মাইট ত্বকের উপরের স্তরে প্রবেশ করে এবং সেখানে ডিম পাড়ে। স্ক্যাবিসের সংক্রমণ হলে ত্বকে চুলকানি শুরু হয়, যা বেশ অস্বস্তিকর। অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা র্যাশও দেখা যায়।
এই রোগটি সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে এটি যে কোনো বয়সের মানুষের মধ্যে হতে পারে। স্ক্যাবিসের লক্ষণ দেখা দিতে ৪-৬ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
যেহেতু এটি ছোঁয়াচে, তাই এটি দ্রুত ছড়াতে পারে। জনবহুল স্থানে, যেমন স্কুল বা হাসপাতাল,
এর প্রাদুর্ভাব সাধারণত বেশি দেখা যায়। তাই সচেতনতা ও শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে
রোগটি দ্রুত ছড়াতে না পারে।
স্ক্যাবিসের কারণ
স্ক্যাবিসের প্রধান
কারণ
হলো
সারকোপটিস স্ক্যাবিই ভার
হোমিনিস (Sarcoptes scabiei var. hominis) নামক মাইট। এই
মাইটটি
শুধুমাত্র মানুষের মধ্যেই
ছড়ায়
এবং
মানুষের ত্বকেই
বেঁচে
থাকতে
পারে।
সংক্রমণের উপায়:
১.
সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শ: স্ক্যাবিস সবচেয়ে বেশি
ছড়ায়
দীর্ঘক্ষণ ত্বকের
সরাসরি
সংস্পর্শের মাধ্যমে। এর
মধ্যে
রয়েছে:
- যৌন সম্পর্ক
- পরিবারের
সদস্যদের মধ্যে স্বাভাবিক স্পর্শ
- শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার
সময় সংস্পর্শ
২.
পরোক্ষ সংক্রমণ: কম
সাধারণ
হলেও,
স্ক্যাবিস মাইট
কিছু
সময়ের
জন্য
বস্তুর
উপর
বেঁচে
থাকতে
পারে।
এর
মাধ্যমে সংক্রমণ হতে
পারে:
- বিছানা, তোয়ালে, কাপড় ভাগাভাগি
করা
- আসবাবপত্র
ব্যবহার করা
তবে
মাইটগুলো মানুষের শরীরের
বাইরে
৪৮-৭২ ঘণ্টার বেশি
বেঁচে
থাকতে
পারে
না,
তাই
পরোক্ষ
সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কম
হয়।
ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী:
- ঘনবসতিপূর্ণ
এলাকায় বসবাসকারী মানুষ
- প্রতিষ্ঠানে
(যেমন: বৃদ্ধাশ্রম, জেল, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র) বসবাসকারী ব্যক্তিরা
- স্বাস্থ্যসেবা
কর্মীরা
- দরিদ্র স্বাস্থ্যবিধি
অনুশীলনকারী ব্যক্তিরা
- রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিরা
গুরুত্বপূর্ণ
তথ্য: স্ক্যাবিস
মাইট
মানুষ
ছাড়া
অন্য
প্রাণীতে
বেঁচে
থাকতে
পারে
না।
তবে
কুকুর
বা
বিড়ালের
“mange” রোগের
মাইট
মানুষের
ত্বকে
সাময়িক
চুলকানি
সৃষ্টি
করতে
পারে,
কিন্তু
স্থায়ী
সংক্রমণ
হয়
না।
স্ক্যাবিস মাইটের জীবনচক্র
স্ক্যাবিস মাইটের
জীবনচক্র বোঝা
রোগের
প্রতিরোধ ও
চিকিৎসার জন্য
গুরুত্বপূর্ণ।
জীবনচক্রের পর্যায়সমূহ:
১.
ডিম: স্ত্রী
মাইট
ত্বকের
সুড়ঙ্গে দৈনিক
২-৩টি ডিম পাড়ে।
ডিম
ফুটে
মাইট
বের
হতে
৩-৪ দিন সময়
লাগে।
২.
লার্ভা: ডিম
থেকে
বের
হওয়া
লার্ভা
সুড়ঙ্গ ছেড়ে
ত্বকের
উপরিভাগে চলে
আসে
এবং
সেখানে
একটি
অস্থায়ী ছোট
ছিদ্র
তৈরি
করে।
এই
পর্যায়ে তারা
ত্বকের
কোষ
খেয়ে
বেড়ে
ওঠে।
৩.
নিম্ফ: লার্ভা
পর্যায়ের পর,
মাইটটি
দুটি
নিম্ফ
পর্যায়ের মধ্য
দিয়ে
যায়।
প্রথম
নিম্ফ
পর্যায়ে তারা
আরও
বড়
হয়
এবং
ত্বকের
আরও
গভীরে
প্রবেশ
করে।
৪.
প্রাপ্তবয়স্ক মাইট: দ্বিতীয় নিম্ফ
পর্যায়ের পর,
মাইটটি
প্রাপ্তবয়স্ক হয়।
পুরুষ
মাইটগুলো সাধারণত ত্বকের
উপরিভাগে থাকে
এবং
স্ত্রী
মাইটের
সাথে
মিলনের
পর
মারা
যায়।
স্ত্রী
মাইটগুলো নতুন
সুড়ঙ্গ তৈরি
করে
এবং
ডিম
পাড়া
শুরু
করে।
সম্পূর্ণ জীবনচক্র সম্পন্ন হতে
১০-১৭ দিন সময়
লাগে।
একটি
স্ত্রী
মাইট
তার
জীবদ্দশায় (যা
প্রায়
১-২ মাস) প্রায়
৪০-৫০টি ডিম পাড়তে
পারে।
স্ক্যাবিস রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ
ক্রেডিট: my.clevelandclinic.org
স্ক্যাবিসের লক্ষণগুলো সাধারণত সংক্রমণের ২-৬ সপ্তাহ পরে দেখা দেয়। যারা আগে স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো ১-৪ দিনের মধ্যেই প্রকাশ পেতে পারে।
প্রধান লক্ষণসমূহ:
১.
তীব্র চুলকানি: স্ক্যাবিসের সবচেয়ে সাধারণ
লক্ষণ
হলো
তীব্র
চুলকানি, বিশেষ
করে
রাতে।
চুলকানি এতটাই
তীব্র
হতে
পারে
যে
এটি
ঘুমের
ব্যাঘাত ঘটায়
এবং
দৈনন্দিন কাজকর্মে প্রভাব
ফেলে।
২.
ত্বকের ফুসকুড়ি ও লালচে দাগ: চুলকানির স্থানে
ছোট
ছোট
লালচে
ফুসকুড়ি দেখা
দেয়।
এগুলো
মাঝে
মাঝে
পানি
ভর্তি
ফোঁড়ার মতো
হতে
পারে।
৩.
সুড়ঙ্গ বা টানেল: স্ক্যাবিস মাইট
তৈরি
করা
সুড়ঙ্গগুলো ত্বকের
উপরিভাগে সরু,
বাঁকানো বা
সোজা
রেখার
মতো
দেখায়। এগুলো
সাধারণত ২-১০ মিলিমিটার লম্বা
হয়
এবং
এর
এক
প্রান্তে একটি
ছোট
ফোঁড়া
বা
ফুসকুড়ি থাকে।
৪.
ক্ষত ও ঘা: অতিরিক্ত চুলকানির কারণে
ত্বকে
ক্ষত
ও
ঘা
তৈরি
হতে
পারে,
যা
পরবর্তীতে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ঝুঁকি
বাড়ায়।
সাধারণত আক্রান্ত হয় এমন স্থানসমূহ:
- আঙ্গুলের
মধ্যবর্তী স্থান
- কবজি, কনুই ও হাঁটুর পেছনে
- কোমর, নাভি ও পেটের চারপাশ
- স্তনের নিচের অংশ
- পুরুষদের
যৌনাঙ্গ
- নিতম্ব ও উরুর অভ্যন্তরীণ অংশ
- পায়ের গোড়ালি
শিশু
ও
শিশুদের ক্ষেত্রে, স্ক্যাবিস মুখ,
মাথা,
ঘাড়
এবং
হাতের
তালুতেও ছড়িয়ে পড়তে
পারে।
স্ক্যাবিসের ধরন
স্ক্যাবিসের বিভিন্ন ধরন
রয়েছে,
যা
মাইটের
সংখ্যা
এবং
রোগীর
অবস্থার উপর
নির্ভর
করে।
১. সাধারণ স্ক্যাবিস (Classic Scabies)
এটি
স্ক্যাবিসের সবচেয়ে সাধারণ
রূপ।
এতে
সাধারণত ১০-১৫টি মাইট থাকে
এবং
উপরে
উল্লিখিত সব
লক্ষণই
দেখা
যায়।
২. নরওয়েজিয়ান বা ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস (Norwegian or Crusted Scabies)
এটি
স্ক্যাবিসের একটি
তীব্র
রূপ,
যা
সাধারণত রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা
কম
থাকা
ব্যক্তিদের মধ্যে
দেখা
যায়।
এর
বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
- হাজার থেকে লাখ লাখ মাইট থাকতে পারে
- ত্বকে মোটা, আঁশযুক্ত
আবরণ (ক্রাস্ট) তৈরি হয়
- চুলকানি কম হতে পারে বা নাও থাকতে পারে
- খুবই সংক্রামক
- চিকিৎসা করা কঠিন
৩. নোডুলার স্ক্যাবিস (Nodular Scabies)
এই
ধরনের
স্ক্যাবিসে ত্বকে
গোলাকার, শক্ত,
চুলকানিযুক্ত গ্রন্থি (নোডিউল)
তৈরি
হয়।
এগুলো
সাধারণত জেনিটাল এলাকা,
বগল
বা
নিতম্বে দেখা
যায়
এবং
চিকিৎসার পরেও
কয়েক
সপ্তাহ
বা
মাস
পর্যন্ত থাকতে
পারে।
৪. বুলোস স্ক্যাবিস (Bullous Scabies)
এটি
একটি
বিরল
ধরনের
স্ক্যাবিস যেখানে
ত্বকে
পানি
ভর্তি
ফোঁড়া
(বুলা)
তৈরি
হয়।
এটি
অন্যান্য বুলোস
ত্বকের
রোগের
সাথে
বিভ্রান্ত হতে
পারে।
৫. অ্যানিমাল স্ক্যাবিস (Animal Scabies)
প্রাণীদের মধ্যে
স্ক্যাবিস হয়,
কিন্তু
সারকোপটিস স্ক্যাবিই ভার
হোমিনিস মাইট
ছাড়া
অন্য
মাইট
মানুষের মধ্যে
দীর্ঘক্ষণ বেঁচে
থাকতে
পারে
না।
তবে
প্রাণী
থেকে
মানুষে
সাময়িক সংক্রমণ হতে
পারে,
যা
সাধারণত নিজে
থেকেই
সেরে
যায়।
স্ক্যাবিসের রোগ নির্ণয়
স্ক্যাবিসের রোগ
নির্ণয় সাধারণত ক্লিনিকাল পরীক্ষার উপর
ভিত্তি
করে
করা
হয়।
চিকিৎসকরা নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করেন:
১. শারীরিক পরীক্ষা
চিকিৎসক রোগীর
ত্বক
পরীক্ষা করেন
এবং
স্ক্যাবিসের বৈশিষ্ট্যসূচক লক্ষণগুলো খোঁজেন,
যেমন:
- সুড়ঙ্গ বা টানেল
- ফুসকুড়ি
ও
ক্ষত
- আক্রান্ত
স্থানের বন্টন
২. ডার্মোস্কোপি
ডার্মোস্কোপ একটি
বিশেষ
ধরনের
ম্যাগনিফাইং গ্লাস
যা
ত্বকের
উপরিভাগের বিস্তারিত দেখতে
সাহায্য করে।
এর
মাধ্যমে মাইট,
ডিম
বা
তাদের
মল
দেখা
যেতে
পারে।
৩. ত্বকের স্ক্র্যাপিং (Skin Scraping)
এই
পদ্ধতিতে, চিকিৎসক সুড়ঙ্গ থেকে
ত্বকের
একটি
পাতলা
স্তর
স্ক্র্যাপ করেন
এবং
মাইক্রোস্কোপের নিচে
পরীক্ষা করেন।
এতে
মাইট,
ডিম
বা
তাদের
মল
দেখা
গেলে
রোগ
নিশ্চিত হওয়া
যায়।
৪. অ্যাডহেসিভ টেপ টেস্ট
এই
পদ্ধতিতে, একটি
স্বচ্ছ
অ্যাডহেসিভ টেপ
সন্দেহজনক এলাকায় লাগানো
হয়
এবং
তা
সরিয়ে
নিয়ে
মাইক্রোস্কোপে পরীক্ষা করা
হয়।
৫. বায়োপসি
বিরল
ক্ষেত্রে, যখন
রোগ
নির্ণয় অস্পষ্ট থাকে,
তখন
ত্বকের
একটি
ছোট
অংশ
বায়োপসি করে
পরীক্ষা করা
হয়।
স্ক্যাবিসের চিকিৎসা
ক্রেডিট: verywellhealth.com
স্ক্যাবিসের চিকিৎসার মূল
লক্ষ্য
হলো
মাইট
মেরে
ফেলা,
লক্ষণগুলো উপশম
করা
এবং
পুনরায় সংক্রমণ প্রতিরোধ করা।
ওষুধ ভিত্তিক চিকিৎসা
১.
পারমেথ্রিন (Permethrin) ৫% ক্রিম: এটি
স্ক্যাবিসের প্রথম
সারির
চিকিৎসা। নির্দেশাবলী অনুযায়ী:
- রাতে স্নান করে শরীর মুছে নিয়ে ক্রিমটি গলা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণ
শরীরে লাগাতে হবে
- বিশেষ করে আঙ্গুলের
মধ্যবর্তী স্থান, নখের নিচে এবং ত্বকের ভাঁজগুলোতে ভালোভাবে লাগাতে হবে
- ৮-১৪ ঘণ্টা পরে স্নান করে ধুয়ে ফেলতে হবে
- সাধারণত একবার ব্যবহারেই
কাজ হয়, কিন্তু প্রয়োজনে ৭
দিন পর আবার ব্যবহার করা যেতে পারে
২.
ইভারমেকটিন (Ivermectin):
এটি
একটি
মৌখিক
ওষুধ
যা
ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস বা
যাদের
টপিকাল
চিকিৎসায় উপকার
হয়নি
তাদের
ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
ডোজ
রোগীর
ওজনের
উপর
ভিত্তি
করে
নির্ধারিত হয়
এবং
সাধারণত দুই
ডোজ
দেওয়া
হয়,
দ্বিতীয় ডোজ
প্রথম
ডোজের
৭-১৪ দিন পর
দেওয়া
হয়।
৩.
বেনজাইল বেনজোয়েট (Benzyl Benzoate):
এটি
আরেকটি
টপিকাল
ওষুধ
যা
স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
এটি
পারমেথ্রিনের মতো
কার্যকর হলেও
ত্বকে
জ্বালাপোড়া বেশি
করতে
পারে।
৪.
সালফার ওয়েট পেস্ট (Sulfur 6% ointment):
এটি
একটি
পুরনো
চিকিৎসা পদ্ধতি
যা
এখনও
কিছু
ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়,
বিশেষ
করে
গর্ভবতী মহিলা
ও
শিশুদের ক্ষেত্রে।
৫.
ক্রোটামিটন (Crotamiton) ১০% ক্রিম বা লোশন: এটি
মাইট
মারার
পাশাপাশি চুলকানি উপশমেও
সাহায্য করে।
গুরুত্বপূর্ণ: চিকিৎসা শুরুর পরেও 2-4 সপ্তাহ
পর্যন্ত চুলকানি থাকতে পারে, কারণ ত্বকে মাইটের অবশিষ্টাংশ থাকে। এটি নতুন সংক্রমণ
নয়।
লক্ষণের চিকিৎসা
স্ক্যাবিসের চিকিৎসার পরেও
চুলকানি কয়েক
সপ্তাহ
পর্যন্ত থাকতে
পারে।
এর
জন্য
নিম্নলিখিত ওষুধগুলো ব্যবহার করা
যেতে
পারে:
- অ্যান্টিহিস্টামিন:
চুলকানি উপশমের জন্য মৌখিক অ্যান্টিহিস্টামিন (যেমন সেটিরিজিন, লোরাটাডিন) বা টপিকাল অ্যান্টিহিস্টামিন ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
- কর্টিকোস্টেরয়েড
ক্রিম: তীব্র চুলকানি ও
প্রদাহের জন্য মাঝারি শক্তির কর্টিকোস্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশেষ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা
শিশু ও শিশুদের জন্য:
- ২ মাসের কম বয়সী শিশুদের জন্য পারমেথ্রিন ক্রিম নিরাপদ
- সালফার ওয়েট পেস্টও শিশুদের জন্য নিরাপদ বিকল্প
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য:
- পারমেথ্রিন
ক্রিম সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়
- ইভারমেকটিন
এড়িয়ে চলা উচিত
ক্রাস্টেড স্ক্যাবিসের জন্য:
- ইভারমেকটিন
ও
পারমেথ্রিন উভয়ই ব্যবহার করা হয়
- একাধিক চিকিৎসার
প্রয়োজন হতে পারে
- হাসপাতালে
ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে
স্ক্যাবিস প্রতিরোধের উপায়

ক্রেডিট: informedhealth.org
স্ক্যাবিস প্রতিরোধের জন্য
নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ
করা
প্রয়োজন:
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি
- নিয়মিত হাত ধোয়া, বিশেষ করে স্ক্যাবিস
রোগীর সংস্পর্শে আসার পর
- ব্যক্তিগত
জিনিসপত্র (তোয়ালে, কাপড়, বিছানার চাদর) ভাগাভাগি করা থেকে বিরত থাকা
- সম্ভাব্য
আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি ত্বকের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা
পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ
- আক্রান্ত
ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি গরম জলে (৬০°C বা ১৪০°F) ধুয়ে ফেলা
- যেসব জিনিস ধোয়া যায় না, সেগুলো প্লাস্টিকের
ব্যাগে ভরে ৭২ ঘণ্টার জন্য সিল করে রাখা
- বাড়ির মেঝে, আসবাবপত্র
নিয়মিত পরিষ্কার করা
সম্পর্কিত ব্যক্তিদের চিকিৎসা
- একই পরিবারের
সবাইকে একই সময়ে চিকিৎসা করা উচিত, যদিও তাদের লক্ষণ না থাকে
- ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের
ব্যক্তিদেরও চিকিৎসা করা উচিত
প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা
- বৃদ্ধাশ্রম,
জেল, শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র ইত্যাদিতে স্ক্যাবিসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন
- একই সময়ে সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া উচিত
- পরিবেশ পরিষ্কার
ও
জীবাণুমুক্ত করা
স্ক্যাবিস দূর
করার ঘরোয়া উপায়
স্ক্যাবিসের চিকিৎসার পাশাপাশি কিছু
ঘরোয়া
প্রতিকার ও
যত্ন
লক্ষণ
উপশমে
সাহায্য করতে
পারে:
চুলকানি উপশমের জন্য
১.
ঠান্ডা কম্প্রেস: চুলকানিযুক্ত স্থানে
ঠান্ডা
কম্প্রেস দিলে
অস্বস্তি কমে
যায়।
২.
ওটমিল বাথ: গোসলের
জলে
ওটমিল
মিশিয়ে নিলে
ত্বকের
জ্বালাপোড়া কমে
যায়।
৩.
ক্যালামাইন লোশন: এটি
চুলকানি উপশমে
সাহায্য করে।
৪.
অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরার শান্তিদায়ক বৈশিষ্ট্য ত্বকের
জ্বালাপোড়া কমাতে
সাহায্য করে।
ত্বকের যত্ন
১.
নরম সাবান ব্যবহার: হার্শ
বা
সুগন্ধযুক্ত সাবান
এড়িয়ে নরম,
ময়েশ্চারাইজিং সাবান
ব্যবহার করা
উচিত।
২.
ময়েশ্চারাইজার: গোসলের
পর
ভালো
মানের
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে
ত্বক
শুষ্ক
হওয়া
থেকে
রক্ষা
পায়।
৩.
নখ ছোট রাখা: নখ
ছোট
রাখলে
চুলকানির সময়
ত্বকে
ক্ষত
করার
সম্ভাবনা কমে
যায়।
খাদ্যাভ্যাস
- ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার খেলে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো থাকে
- পর্যাপ্ত
পানি পান করা উচিত
- অ্যালার্জি
সৃষ্টিকারী খাবার এড়িয়ে চলা উচিত
তবে
মনে
রাখতে
হবে,
এই
ঘরোয়া
প্রতিকারগুলো শুধুমাত্র লক্ষণ
উপশমে
সাহায্য করে,
মাইট
মারতে
পারে
না।
সঠিক
চিকিৎসার জন্য
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
অপরিহার্য।
অচিকিৎসিত স্ক্যাবিসের জটিলতা
স্ক্যাবিসের সঠিক
চিকিৎসা না
করলে
বিভিন্ন জটিলতা
দেখা
দিতে
পারে:
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ
অতিরিক্ত চুলকানির কারণে
ত্বকে
ক্ষত
তৈরি
হলে
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হতে
পারে।
এর
লক্ষণগুলো হলো:
- ক্ষত থেকে পুঁজ বের হওয়া
- ক্ষত স্থানে ফোলা ও লাল হয়ে যাওয়া
- জ্বর আসা
- ব্যথা বাড়া
এই
অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসার প্রয়োজন হতে
পারে।
সেপসিস
গুরুতর
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ রক্তে
ছড়িয়ে পড়লে
সেপসিস
হতে
পারে,
যা
জীবননাশের কারণ
হতে
পারে।
পোস্ট-স্ক্যাবিয়াসিক ডার্মাটাইটিস
চিকিৎসার পরেও
কয়েক
সপ্তাহ
বা
মাস
পর্যন্ত চুলকানি ও
ফুসকুড়ি থাকতে
পারে।
এই
অবস্থাকে পোস্ট-স্ক্যাবিয়াসিক
ডার্মাটাইটিস বলা
হয়।
এটি
মাইটের
প্রতি
অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণে
হয়।
মানসিক প্রভাব
দীর্ঘকালীন স্ক্যাবিস মানসিক
স্বাস্থ্যের উপর
প্রভাব
ফেলতে
পারে:
- ঘুমের সমস্যা
- উদ্বেগ ও স্ট্রেস
- সামাজিক বিচ্ছিন্নতা
- ডিপ্রেশন
ক্রনিক কিডনি রোগ
দীর্ঘকালীন স্ক্যাবিস, বিশেষ
করে
ক্রাস্টেড স্ক্যাবিস, কিছু
ক্ষেত্রে কিডনি
রোগের
সাথে
সম্পর্কিত হতে
পারে।
বিশেষ জনগোষ্ঠীতে স্ক্যাবিস
কিছু
বিশেষ
জনগোষ্ঠীতে স্ক্যাবিস আলাদাভাবে প্রকাশ
পেতে
পারে
এবং
চিকিৎসায় বিশেষ
যত্নের
প্রয়োজন হতে
পারে।
শিশু ও শিশু
শিশু
ও
শিশুদের মধ্যে
স্ক্যাবিসের কিছু
বিশেষত্ব রয়েছে:
- লক্ষণ প্রকাশ পেতে বেশি সময় লাগতে পারে
- ফুসকুড়ি
মুখ, মাথা, ঘাড় ও
হাতের তালুতেও ছড়িয়ে যেতে পারে
- চুলকানির
কারণে খাওয়া-দাওয়া ও
ঘুমের সমস্যা হতে পারে
- পারমেথ্রিন
ক্রিম নিরাপদ চিকিৎসা, কিন্তু ডোজ ও
ব্যবহারের নিয়ম সঠিকভাবে মেনে চলা প্রয়োজন
বয়স্ক ব্যক্তিরা
বয়স্ক
ব্যক্তিদের মধ্যে
স্ক্যাবিস:
- লক্ষণ কম স্পষ্ট হতে পারে
- চুলকানি কম হতে পারে বা অন্য রোগের সাথে মিশে যেতে পারে
- ক্রাস্টেড
স্ক্যাবিসের ঝুঁকি বেশি
- অন্যান্য
রোগের ওষুধের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়া হতে পারে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তিরা
এইচআইভি আক্রান্ত, ক্যান্সার রোগী
বা
ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ
গ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে:
- ক্রাস্টেড
স্ক্যাবিসের ঝুঁকি অনেক বেশি
- লক্ষণ অস্বাভাবিক
হতে পারে
- চিকিৎসা কঠিন হতে পারে এবং একাধিক চিকিৎসার
প্রয়োজন হতে পারে
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলারা
গর্ভবতী ও
স্তন্যদানকারী মহিলাদের ক্ষেত্রে:
- পারমেথ্রিন
ক্রিম সাধারণত নিরাপদ বলে মনে করা হয়
- ইভারমেকটিন
এড়িয়ে চলা উচিত
- চিকিৎসার
আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত
স্ক্যাবিস সম্পর্কে ভুল ধারণা ও বাস্তবতা
স্ক্যাবিস সম্পর্কে অনেক
ভুল
ধারণা
প্রচলিত রয়েছে। এগুলো
জানা
থাকলে
রোগ
প্রতিরোধ ও
চিকিৎসা সহজ
হয়।
ভুল ধারণা ১: স্ক্যাবিস শুধু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হয়
বাস্তবতা: স্ক্যাবিস যেকোনো
সামাজিক শ্রেণির মানুষের মধ্যে
হতে
পারে।
যদিও
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা
ও
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সংক্রমণের ঝুঁকি
বেশি,
তবে
যেকেউ
আক্রান্ত হতে
পারে।
ভুল ধারণা ২: স্ক্যাবিস প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়
বাস্তবতা: মানুষের স্ক্যাবিস মাইট
শুধুমাত্র মানুষের মধ্যেই
ছড়ায়। প্রাণীদের মধ্যে
আলাদা
ধরনের
স্ক্যাবিস মাইট
থাকে
যা
মানুষের মধ্যে
দীর্ঘক্ষণ বেঁচে
থাকতে
পারে
না।
তবে
প্রাণী
থেকে
মানুষে
সাময়িক সংক্রমণ হতে
পারে।
ভুল ধারণা ৩: স্ক্যাবিস নিজে থেকেই সেরে যাবে
বাস্তবতা: স্ক্যাবিস চিকিৎসা ছাড়া
সেরে
যায়
না।
বরং
সময়ের
সাথে
সাথে
অন্যদের মধ্যে
ছড়িয়ে পড়ে
এবং
জটিলতা
তৈরি
হতে
পারে।
ভুল ধারণা ৪: স্ক্যাবিস একবার হলে আর হয় না
বাস্তবতা: স্ক্যাবিসে একবার
আক্রান্ত হলেও
পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার
ঝুঁকি
থাকে।
পূর্ববর্তী সংক্রমণ থেকে
কোনো
দীর্ঘকালীন অনাক্রম্যতা তৈরি
হয়
না।
ভুল ধারণা ৫: স্ক্যাবিসের চিকিৎসার পরেও চুলকানি থাকলে চিকিৎসা ব্যর্থ
বাস্তবতা: চিকিৎসার পরেও
কয়েক
সপ্তাহ
পর্যন্ত চুলকানি থাকতে
পারে।
এটি
পোস্ট-স্ক্যাবিয়াসিক
ডার্মাটাইটিস নামে
পরিচিত
এবং
এটি
মাইটের
প্রতি
অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণে
হয়।
ভুল ধারণা ৬: স্ক্যাবিস শুধু যৌন সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়
বাস্তবতা: যদিও
যৌন
সংস্পর্শের মাধ্যমে স্ক্যাবিস ছড়াতে
পারে,
তবে
এটি
শুধুমাত্র যৌনবাহিত রোগ
নয়।
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে
স্বাভাবিক স্পর্শ,
শিশুদের মধ্যে
খেলাধুলা ইত্যাদির মাধ্যমেও ছড়াতে
পারে।
স্ক্যাবিস হলে কি কি খাওয়া
যাবে না
চুলকানি ও প্রদাহ কমাতে
কিছু খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি —
· অতিরিক্ত ঝাল, মশলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার
· ফাস্টফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার
· দুগ্ধজাত খাবার (যেমন দুধ, পনির, আইসক্রিম)
· অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার
যা খাওয়া উচিত:
ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত
খাবার যেমন—লেবু, ফলমূল, শাকসবজি ও পানি বেশি
করে পান করা।
স্ক্যাবিস কত দিন থাকে
- চিকিৎসা শুরু করলে সাধারণত ৭–১৪
দিনের মধ্যে উপসর্গ কমে যায়।
- চুলকানি পুরোপুরি
বন্ধ হতে ২–৩ সপ্তাহ লাগতে পারে।
- যদি ৩ সপ্তাহ পরও উন্নতি না হয়, পুনরায় চিকিৎসা নিতে হয়।
- চিকিৎসা না নিলে সংক্রমণ ২–৩ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
স্ক্যাবিসের হোমিও ঔষধ
অনেকে
হোমিও
চিকিৎসায় ভালো
ফল
পেয়ে
থাকেন।
সাধারণ
কিছু
হোমিও
ওষুধ
হলো
–
- Sulphur 200:
পুরোনো স্ক্যাবিসে কার্যকর।
- Psorinum 30:
তীব্র চুলকানিযুক্ত স্ক্যাবিসে উপকারী।
- Arsenicum Album:
প্রদাহ ও
ব্যথা কমায়।
⚠️ হোমিও চিকিৎসা শুরু
করার
আগে
অভিজ্ঞ
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
উচিত।
কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন?
নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
- চুলকানি 2-3 দিনের মধ্যে কমছে না
- ত্বকে পুঁজ, ব্যথা বা জ্বর হচ্ছে (ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের লক্ষণ)
- শিশু, বৃদ্ধ বা প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকা ব্যক্তি আক্রান্ত
- গোটা শরীর জুড়ে মোটা ক্রাস্ট তৈরি হয়েছে (Crusted Scabies)
স্ক্যাবিস দেখতে কেমন
স্ক্যাবিসে ত্বকে
সাধারণত দেখা
যায়
–
- ছোট লাল ফোস্কা বা র্যাশ
- চুলকানো দাগ বা গর্তের মতো চিহ্ন
- সংক্রমিত
স্থানে ত্বক মোটা ও
শুকনো হয়ে যাওয়া
- শিশুদের ক্ষেত্রে
মাথা ও
মুখে র্যাশ দেখা দিতে পারে
সচরাচর জিজ্ঞাস্য (FAQ)
প্রশ্ন ১: স্ক্যাবিস কতদিনে
ভালো
হয়?
👉 সাধারণত ৭–১৪ দিনের মধ্যে
সেরে
যায়,
তবে
চুলকানি পুরোপুরি যেতে
৩
সপ্তাহ
পর্যন্ত সময়
লাগে।
প্রশ্ন ২: স্ক্যাবিসে আবার
আক্রান্ত হওয়া
যায়
কি?
👉 হ্যাঁ,
আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে
পুনরায়
সংক্রমিত হওয়া
সম্ভব।
প্রশ্ন ৩: চুলকানি বন্ধ
হতে
কতদিন
লাগে?
👉 চিকিৎসার পরও
কিছুদিন চুলকানি থাকতে
পারে,
যা
ত্বক
পুনরুদ্ধারের সময়
স্বাভাবিক।
প্রশ্ন ৪: ঘরোয়া উপায়ে
স্ক্যাবিস সারানো
যায়
কি?
👉 প্রাথমিক অবস্থায় কিছুটা
উপশম
মিললেও
সম্পূর্ণ নিরাময়ের জন্য
চিকিৎসা অপরিহার্য।
প্রশ্ন ৫: স্ক্যাবিসে কী
ধরনের
খাবার
এড়িয়ে
চলা
উচিত?
👉 ঝাল,
তৈলাক্ত, মিষ্টি
ও
প্রক্রিয়াজাত খাবার
এড়িয়ে
চলা
উচিত।
উপসংহার
স্ক্যাবিস একটি
অত্যন্ত সংক্রামক ত্বকের
রোগ
যা
সারা
বিশ্বে
ছড়িয়ে পড়েছে। এটি
শুধু
শারীরিক অস্বস্তিই সৃষ্টি
করে
না,
বরং
মানসিক
চাপ
ও
সামাজিক বিচ্ছিন্নতারও কারণ
হতে
পারে।
তবে
সঠিক
জ্ঞান,
সচেতনতা এবং
সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে এই
রোগ
নিয়ন্ত্রণ করা
সম্ভব।
স্ক্যাবিসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
মনে
রাখা
প্রয়োজন:
১.
সময়মতো চিকিৎসা: লক্ষণ
দেখা
দেওয়ার সাথে
সাথে
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
উচিত।
২.
সম্পূর্ণ চিকিৎসা: নির্দেশিত ওষুধ
সঠিকভাবে এবং
সম্পূর্ণ ডোজে
ব্যবহার করা
উচিত।
৩.
সংস্পর্কে আসা ব্যক্তিদের চিকিৎসা: একই
পরিবারের সবাইকে
একই
সময়ে
চিকিৎসা করা
উচিত,
যদিও
তাদের
লক্ষণ
না
থাকে।
৪.
পরিবেশ পরিষ্কার: আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিসপত্র পরিষ্কার ও
জীবাণুমুক্ত করা
প্রয়োজন।
৫.
পুনরায় সংক্রমণ প্রতিরোধ: চিকিৎসার পরেও
সতর্কতা অবলম্বন করতে
হবে
যাতে
পুনরায় সংক্রমিত না
হয়।
স্ক্যাবিস নিয়ন্ত্রণে জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন
করতে
পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি,
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রোগ
নির্ণয় ও
চিকিৎসার ব্যবস্থা, এবং
প্রয়োজনে গণ
চিকিৎসা কর্মসূচি পরিচালনা করা
যেতে
পারে।
সবশেষে, স্ক্যাবিস একটি চিকিৎসাযোগ্য রোগ। সঠিক চিকিৎসা ও যত্নের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই স্ক্যাবিসের লক্ষণ দেখা দিলে লজ্জা বা ভয় না পেয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
